Translate

শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১২

ফেসবুকে মুন্নী সাহার প্রতি খোলা চিঠি চিঠি মুন্নী সাহাকেও মেসেজ হিসেবে পাঠানো হয়েছে

চিঠি মুন্নী সাহাকেও মেসেজ হিসেবে পাঠানো হয়েছে

মাহমুদ সোহাগ
আমার এই লেখা গতকাল ৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখ রাতে আপনার টকশো নিয়ে। আপনাকে আগে খুবই শ্রদ্ধা করতাম কিন্তু গত রাতের পরে কেমন যেন একটা মানসিকতা চলে এসেছে আপনাকে ঠিক বোঝাতে পারব না।
আমি বর্তমানে মালয়েশিয়া প্রবাসী। দেশের প্রতি টান থেকেই দেশের খবরাখবর জানার জন্য আপনাদের চ্যানেলটা দেখি। প্রতি মাসে শুধুমাত্র আপনাদের চ্যানেলটার জন্যই বাংলাদেশি টাকায় ৬০০ টাকা পে করতে হয় আমাকে।
না, আমি ডেসটিনির ডিস্ট্রিবিউটর না। তবে আমি এমএলএম এই সাবজেক্টের ওপর ক্যালির্ফোনিয়া থেকে এমবিএ করেছি। তা ছাড়াও আমি যখন দেশে গিয়েছিলাম তখন থেকেই ডেসটিনি সম্মন্ধে অনেক কিছু জানি। কিন্তু দেশে থাকি না শুধু এই কারণেই আমি ডেসটিনিতে জয়েন করিনি।
আপনি মোহাম্মদ রফিকুল আমীন সাহেবকে বলেছেন, আমি এমএলএম হোয়াটএভার বুঝি না আর বুঝতেও চাই না। বাংলাদেশের মানুষ বোকা...স্টুপিড। সো এভাবেই এত রাতারাতি আলাদিনের চেরাগ পেয়ে গেছেন_ আপনি বাংলাদেশের মানুষকে কিভাবে বোকা বা স্টুপিড বলতে পারেন!!! আপনার এই কথা শুনে সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হয়েছে আমার বন্ধু (ও আমেরিকান)। ও সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে বলল, তোমরা না নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছ, তোমরা না রক্ত দিয়ে ভাষার অধিকার পেয়েছে! তাহলে কিভাবে একটা গর্বিত জাতীকে একটা রিপোর্টার বোকা বা স্টুপিড বলতে পারে!!!। মুনি্ন আপা, আপনার মনে রাখা উচিত ছিল, এই অনুষ্ঠানটা আপনার ভাষায় বোকা বা স্টুপিড বাংলাদেশিরাই শুধু দেখছে না সারাবিশ্বের বিদেশিরাও দেখছে আর এখন অনেক বিদেশিই কিন্তু বাংলা জানে। আপনাদের মতো এরকম তথাকথিত বাংলাদেশিদের জন্যই বিদেশে বসে আমাদের লজ্জিত হতে হয়, মাথা নিচু করে থাকতে হয়। আপনাদের চেয়ে আমরা বাংলাদেশকে কম ভালোবাসি না, আমাদের মনে হয় বেশিই ভালোবাসি। কারণ, বিদেশে বসেই বোঝা যায় দেশের প্রতি আমাদের টান। তাই বিদেশে বসে সহ্য করতে পারি না বাংলাদেশ বা বাঙালি সম্পর্কে কোনো অযৌক্তিক বা অর্বাচীন কোনো মন্তব্য।
আর আপনি বলেছেন, আমি এমএলএম হোয়াটএভার বুঝি না আর বুঝতেও চাই না। আপনি বুঝবেন কিভাবে!!! আপনার তো এই সাবজেক্ট সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। আর যাদের অল্প বিদ্যা, তারা ভয়ঙ্কর তারাই শুধু একটা বিষয় সম্পর্কে না জেনে এরকম মন্তব্য করতে পারে। আপনি কি জানেন, ইউএসএ, ইউকেসহ বিশ্বের প্রায় ১৩০টি দেশে এই ব্যবস্যা আইন দ্বারা স্বীকৃত? আপনি কি জানেন, এই সাবজেক্টের ওপর বিবিএ, এমবিএসহ ডক্টরেট ডিগ্রি পর্যন্ত চালু আছে? বাংলাদেশে নীতিমালা না থাকতে পারে কিন্তু তাই বলে আপনি পুরো ডিরেক্ট মার্কেটিং সিস্টেম সম্পর্কে এই মনোভাব পোষণ করতে পারেন না। এটা আপনার বোকামীরই পরিচায়ক।
আপনার এই ব্যবসা সম্পর্কে বিরূপ ধারণা থাকতে পারে কিন্তু আপনি একজন হোস্ট হিসেবে এরকম কমেন্টস করতে পারেন না। একজন হোস্ট থাকবে নিরপেক্ষ কিন্তু আপনার ওই বিরূপ ধারণার জন্যই বোধহয় পুরো অনুষ্ঠানেই দেখা আপনাকে গেল আক্রমণাত্মক। হ্যাঁ, এই আক্রমণাত্মক মনোভাবের জন্যই আপনাকে পছন্দ করতাম কিন্তু দেখলাম আপনি অনুষ্ঠান শুরুই করলেন নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে। আপনি ডেসটিনি পছন্দ করেন না তাই সবই আপনার অপছন্দ। তারপর আপনি একটা প্রশ্ন করে অতিথিকে উত্তর দিতে না দিয়েই আপনি দুচার কথার পরেই বারবার ইন্টারআপ করে আপনার কথাই দর্শকদের শোনাচ্ছেন। অতিথির উত্তরই যদি না শুনতে পারি তাহলে তাকে আমন্ত্রণ করলেন কেন! আপনি কি জানেন, এটাকে বিদেশে খুবই অসৌজন্যতা বলে গণ্য করা হয়। বিদেশের ভালো ভালো চ্যানেলের কিছু টকশো দেখলে মনে হয় আপনার এই বদ অভ্যাসটা কাটতে পারে।
পত্রিকার সমস্ত খবর এবং ডেসটিনির ম্যানেজমেন্টের কথা শুনে আমার নিরপেক্ষ ধারণা হল_ ডেসটিনির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু অভিযোগ করেছে তাই নিয়ে পত্রিকাগুলো ফুঁঁলিয়ে ফাঁপিয়ে এত প্রচার করছে। কিন্তু ডেসটিনির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই প্রমাণিত নয় এবং ডেসটিনির কোনো ডিস্ট্রিবিউটরেরও ডেসটিনির বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই তাহলে আপনিসহ কিভাবে পত্রিকাগুলো এভাবে ঢালাও অভিযোগ করে। এমনকি অন্যান্য যেসব কোম্পানি প্রতারণা করেছে তাদের সেই প্রতারণার দায়ও ডেসটিনির ঘাড়ে চাঁপাতে পারে? আসলে বাংলাদেশে পত্রিকাগুলোর বাক-স্বাধীনতার নামে যা চলছে তা আর াক বলব। বোধ হয় এজন্যই আপনারা এভাবে নিউজ বা আপনাদের কাটতির জন্য প্রচারণা চালাতে পারেন। বিদেশে এরকম হলে মানহানীর মামলায় ক্ষতিপূরণ দিয়ে এতদিনে দেউলিয়া হয়ে যেতেন।
আপনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এটা গ্রহণ করত না। হা হা হা .... আপনি কি জানেন, ইন্ডিয়াতে এমএলএম অ্যাক্ট আছে? সেখানে বেশ কয়েকটা কোম্পানি কাজ করছে? এমনকি বিশ্ববিখ্যাত এমএলএম কোম্পানি 'এমওয়ে'ও ইন্ডিয়াতে শাখা ওপেন করেছে।
শেষে দেখলাম উপসংহারে ডেসটিনির চেয়ারম্যান একটা টিভি কমার্স শোর উদাহরণ দিয়ে বললেন যে, তারা এটা অতিরঞ্জিত করছে। ... কিন্তু আপনি সেটাই টেনে নিয়ে বললেন, ডেসটিনির চেয়ারম্যান স্বীকার করেছেন যে তারা অতিরঞ্জিত কথা বলে লোভ দেখান! আসলে আপনি ডেসটিনি তথা এলএমএল বিজনেস সম্পর্কে কিছুই জানে না আর আপনি সেটা স্বীকারও করেছেন। আমার মনে হয় একটা জিনিস সম্পর্কে আগে জেনে তারপর সেটা সম্পর্কে কথা বলাই বুদ্ধিমানের পরিচয়।
গত ৯ এপ্রিল আপনাদের প্রচারিত নিউজগুলোও আপনার মনোভাবের পরিচয় দিয়েই সংবাদ প্রচার করছে দেখলাম। দুদকসহ অন্যরা তো তদন্ত করছে। তাই আগেই ডেসটিনিকে দোষী না বানিয়ে তদন্ত রিপোর্টটা প্রকাশ হোক_ তারপর ডেসটিনি যদি দোষী হয় তাহলে ছিঁড়ে খুঁড়ে ফেলুন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন