Translate

সোমবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১২

ছিনতাই !!! মেয়েরা সাবধান !!! নিজে সতর্ক্ব থাকি অন্যকে সতর্ক করি...।।

Important Note For Girls: কারা, কখন, কীভাবে ছিনতাই করে।
রিকশায় যাচ্ছেন, হঠাৎই পাশের মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেট কার বা ট্যাক্সিক্যাব থেকে টান অনুভব করলেন। ব্যাগ ছিনতাই করার টান। ব্যাগ তো গেলই, আপনিও হয়তো পড়ে গেলেন রাজপথে; পেছনে আসছে ধেয়ে দ্রুতবেগে বাসটি। বছর বছর ধরে এমন ঘটনা ঘটেই চলেছে। এই ধরনের ছিনতাইয়ের শিকার সব সময় নারী...


আমার এক বন্ধুর ঘটনা....

সপ্তাহ খানেক আগের ঘটনা। ঘড়ির কাঁটা রাত ১০টার কাছাকাছি হবে। মাকে চিকিৎসক দেখিয়ে ফিরছিলাম। আমাদের রিকশাটা তখন মিরপুর রোডের সিটি কলেজের সামনে। দ্রুতগতিতে সাদা রঙের একটি প্রাইভেট কার আসছিল। সেটি দেখে রিকশাওয়ালাকে বললাম সাবধান হতে। রিকশার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রাইভেট কার থেকে কেউ একজন আমার ব্যাগ ধরে টান দেয়। কিছু বোঝার আগেই রিকশা থেকে পড়ে যাই ব্যস্ত রাস্তার ওপর। এ সময় গাড়ি চলাচল করছে। চারপাশে মানুষও রয়েছে। পড়ে গিয়েই পেছনে ঘুরে দেখি, দ্রুতবেগে একটি বাস আসছে। বাস দেখে আর্তচিৎকার করতে থাকি। সৌভাগ্যক্রমে বাসচালক আমাকে দেখতে পেলেন এবং বাসটি থামাতে সক্ষম হলেন। তখন বাস থেকে আমার দূরত্ব মাত্র এক হাত সমান। অশেষ ধন্যবাদ সেই বাসচালককে। শারীরিকভাবে আহত হলেও মনে হয়েছে বেঁচে তো আছি। তবে পাশ দিয়ে কোনো গাড়ি গেলেই আতঙ্কিত হয়ে উঠি। ভয়ে বুকটা ঢিপঢিপ করে। এভাবে ভয় নিয়ে কত দিন চলবে?
এই অভিজ্ঞতার কথা শুনে অনেকেই বলেছেন তাঁদের কথা। কারও পরিচিত, কারও বন্ধু কিংবা কারও কাছের কেউ। একটি বিষয়ে মিল হলো, এ ছিনতাইয়ের শিকার মূলত নারীরাই হন। বিষয়টা শুধু ছিনতাইয়ে সীমাবদ্ধ থাকে না। এর থেকে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ রকম কয়েক জনের অভিজ্ঞতার কথা শোনা যাক।

মাঝে মাঝে কিছু মনে রাখতে পারি নাঃ
মোসফেয়ারা খানম
একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত
গত রমজান মাসের কথা। সকাল সাতটার দিকে আমি বাসার কাজের লোককে দিতে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলাম। রিকশা নিয়েছিলাম বাসার সামনে থেকে। আমাদের রিকশা সায়েন্স ল্যাবরেটরি পার হয়ে এলিফ্যান্ট রোডের দিকে যাচ্ছিল। এরপর আর আমার কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফেরে, তখন আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজে। আসল ঘটনা পরে জানতে পেরেছি। একটি মাইক্রোবাস থেকে একজন আমার ব্যাগ টান দেয়। আমি পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। রাস্তার এক ঝাড়ুদার ও রিকশাওয়ালা আমাকে বাসায় পৌঁছে দেন। তারপর হাসপাতাল। শরীরের একটা পাশ গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চোখে রক্ত জমে যায়। মাথায় অনেক আঘাত পাই। প্রায় দুই মাস শয্যাশায়ী ছিলাম। থানায় জিডি করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এখনো চোখে ব্যথা অনুভূত হয়। মাঝে মাঝে কিছু মনে রাখতে পারি না।

অসহায় আমরাঃ আলো কম থাকলে, ফাঁকা বা নির্জন রাস্তায় ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটে। তবে কয়েক জনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, ব্যস্ত রাজপথে দিনের বেলায়ও এমন ঘটনার শিকার হন নারীরা। ব্যাগ তো চলে যায়ই সঙ্গে বিপন্ন হয়ে পড়ে জীবন। অনেকেই অভিযোগ করেছেন পুলিশের কাছে। কোনো প্রতিকার হয়নি। ধরা পড়েনি অপরাধী। ছাত্রী, কর্মজীবী নারী বা সাধারণ গৃহিণীও বাইরে বের হলে একটি ব্যাগ নেন। তাতে হয়তো মুঠোফোনসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থাকে। তাহলে একটি ব্যাগই কি জীবনের গতি থামিয়ে দেবে?

একটা দেশের সব জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা সম্ভব নয়। আমাদেরকে এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাস্তায় কারও বিপদ দেখলে পাশ কাটিয়ে চলে গেলে ছিনতাইকারীদের উৎসাহ দেওয়া হবে। একে অপরকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের কে প্রতিবাদী হতে হবে; তাহলেই সমাজ থেকে সকল অন্যায়-অবিচার দূর হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন